অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : তারল্য বাড়াতে বিএসইসি ব্যাংকের সহায়তা চাইল। নিম্নমুখী বাজারে লেনদেন কমে যাওয়ায় তারল্য বাড়াতে ব্যাংকের সহায়তা চেয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। রাষ্ট্রীয় মালিকানার ও বেসরকারি ৬১টি ব্যাংককে এবার আনুষ্ঠানকিভাবে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত দুই চিঠিতে ব্যাংকগুলোকে এ আহবান জানানো হয়।
রেজাউল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “৩৩টি ব্যাংক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করেছে। সেগুলোকে বলেছি, সেই তহবিল থেকে বিনিয়োগ বাড়াতে।
এর বাইরে ২৮টি ব্যাংক ২০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করেনি। সেগুলোকে আলাদা চিঠি দিয়ে এ তহবিল গঠন করে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এর আগে গত ১০ মার্চ টানা নিম্নমুখী প্রবণতায় পুঁজিবাজারে অস্থিরতা দেখা দেওয়ার প্রেক্ষাপটে ব্যাংকের বিনিয়োগ বাড়াতে ব্যাংকারদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিন ‘সিদ্ধান্ত’ নেওয়ার কথা জানিয়েছিল বিএসইসি।
ওই দিন বিএসইসি কার্যালয়ে বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে তারল্য বাড়াতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান অর্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।
বুধবার ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, বর্তমান পুঁজিবাজারে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের প্রাধান্যই বেশি। মোট বিনিয়োগের ৮০ শতাংশই তাদের। অথচ প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণই বেশি হওয়া উচিত ছিল। পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ব্যক্তির চেয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে লেনদেনে প্রাধান্য থাকা উচিত ছিল।
এমন প্রেক্ষাপটে বিশেষ তহবিল গঠনের সুবিধা নেওয়াসহ ব্যাংকগুলোকে বাজারে বিনিয়োগের অনুরোধ জানানো হয় চিঠিতে।
২০২০ সালের শুরুর দিকে বড় পতন হলে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ছয় দফা নির্দেশনার আলোকে প্রতিটি ব্যাংককে কিছু শর্তে ২০০ কোটি টাকার ‘বিশেষ তহবিল’ গঠনের সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বিশেষ তহবিলের আওতায় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা অর্থ ব্যাংকের এক্সপোজার হিসেবে গণ্য করা হবে না বলে ওই নির্দেশনায় বলা হয়।
ব্যাংকগুলো নিজস্ব অর্থে এ তহবিল গঠন করতে পারবে। কিংবা ট্রেজারি বিল বা ট্রেজারি বন্ড রেপোর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তহবিল গঠন করতে পারবে।
ইচ্ছে করলে প্রথমে নিজেদের অর্থে তহবিল গঠন করে পরে বিল বা রেপোর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ওই পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে।
ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো রেগুলেটরি মূলধনের ২৫ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে। ব্যাংকের এ বিনিয়োগসীমার মধ্যে ব্যাংকের ধারণ করা সব ধরনের শেয়ার, ডিবেঞ্চার, করপোরেট বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট ও অন্যান্য পুঁজিবাজার নির্দেশনাপত্রের বাজারমূল্য ধরে মোট বিনিয়োগ হিসাব করা হয়।
২০০ কোটি টাকার ‘বিশেষ তহবিল’ গঠনের যে সুযোগ দেওয়া হয় তা এই বিনিয়োগ সীমার বাইরে থাকবে বলে নীতিমালায় জানানো হয়, যা ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।