Advertisement for African All Media List

লকডাউন বা শাটডাউন নিম্নবিত্তের কী হবে! : সম্পাদকের টেবিল থেকে

লকডাউন বা শাটডাউন নিম্নবিত্তের কী হবে! দেশের করোনা পরিস্থিতি বিপদজনকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর্যায়ে রয়েছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সেক্ষেত্রে শুধু ঢাকা নয়, পুরো দেশকেই লকডাউন করার প্রয়োজন হয়ে উঠেছে। শহর বা দেশ অবরুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রায় সব ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে যাবে।

এই পরিস্থিতি নিম্নবিত্ত মানুষ কিভাবে দিনযাপন করবেন? ‘যারা কর্মহীন তাদের কি মানবিক সহায়তা দেয়া হবে’। বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ। বন্ধ দেয়া হচ্ছে- তাই অটোরিকশা-ব্যাটারী চালিত ভান-রিকসা চালিয়ে যারা জীবিকা নির্বাহ করেন তাদের অবস্থাও আজ নাজুক। যারা দিন আনেন দিন খান সেইসব দিন মজুরের হাতেও এখন কোনো কাজ নেই৷

বিশ্বব্যাংকের হিসেবে বাংলাদেশে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করেন। যারা দিন আনে দিন খায়। তার উপর রয়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা। করোনায় শুধু তারাই নন, যারা চাকরিজীবী নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত সবাই সংকটে আছেন। তারা পড়বেন ভীষন সমস্যার মধ্যে।

লকডাউন বা শাটডাউন ঘোষনা হলেও সারাদেশের মানুষের জন্য বিশেষ করে যারা নিম্ন মধ্যবিত্ত বা মধ্যবিত্ত তাদের নিয়ে কোনো পরিকল্পনার কথা এখনো জানা যায়নি। যদি হয়ও তাহলে লকডাউন হলে খাদ্য বা অন্যান্য সহায়তা কিভাবে মানুষের কাছে পৌঁছানো হবে তাও নিশ্চিত করা হয়নি সাধারণ মানুষকে।

সাধারন জনগনের মধ্যে এখনই খাদ্য এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের পর্যাপ্ততা নিশ্চিত করে সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। সেটা করা না হলে লকডাউনের সময় খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। বিশেষ করে নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ দুর্যোগে পড়বে।

করোনা ভাইরাসে লকডাউন বা শাটডাউনের কারণে হঠাৎ করেই উপার্জন বন্ধ হয়ে গেছে লাখ লাখ মানুষের। করোনা ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশে টানা সাধারণ ছুটিতে শ্রমজীবী মানুষের দুর্দশা এখন চরমে। বিশেষ করে রিক্সাওয়ালা, হকার কিংবা সরকারের ট্রেড লাইসেন্স ও শ্রম আইনের অধীনে নেই এরকম অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কয়েক কোটি শ্রমজীবী এখন ভবিষ্যত নিয়ে অন্ধকারে। ফলে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে করোনা পরিস্থিতিতে আয় হারিয়ে এসব মানুষ এখন টিকে থাকবে কিভাবে?

সামনে ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে আয় এবং ব্যবসা দুটোই বাড়ানোর পরিকল্পনা ছিলো ব্যবসায়ীদের। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে ব্যবসার সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে হয়। ঈদে ব্যবসা তো করতেই পারবে না, বরং পরিবারই আর্থিকভাবে হুমকির মধ্যে। আর কর্মীদের বেতন দিতেও পারবে না। এমনকি তাদেরকে চাকরীতে রাখতে পারবে না। এখন তাদের অবস্থা তো আরো খারাপ। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের ব্যবসায়ীরা সরকারি প্রণোদনার আওতায় নেই।

একজন গাড়ি চালক অবশ্য এখনি অতো দূরের ভবিষ্যতের কথা ভাবতে পারছেন না। পরে কী হবে তা বুঝতে পারছেন না। সরকারের খাদ্য সহায়তার আওতার বাইরেই রয়ে গেছেন অনেক মানুষ। বাংলাদেশে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানই আছে যারা এখনো তাদের কর্মীদের বেতন দেয়নি। তারাও রয়েছেন বিপদে। চলতি মাসেও বেতন পাবেন কি-না, না পেলে কীভাবে সংসার চালাবেন তা নিয়ে দু:শ্চিন্তায় আছেন তিনি।

অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমজীবীদের জরুরী সাহায্যও দরকার। বাংলাদেশে রিক্সাওয়ালা, হকার থেকে শুরু করে দিনমজুর সকলেই আসলে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের অন্তর্ভূক্ত।

আবার যারা মাসভিত্তিক বেতন পান এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন যেগুলো সরকারের ট্রেড লাইসেন্স কিংবা শ্রম আইনের অধীনে নয়, তারাও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের অংশ। অথচ এ ধরণের শ্রমজীবীর সংখ্যা ৫ কোটি ১৭ লক্ষেরও বেশি। যা দেশের মোট কর্মসংস্থানের ৮৫.১ শতাংশ।

অন্যদিকে, পণ্য মুল্যের কি অবস্থ্য? এদেশের মানুষগুলোও বেশ অসভ্য। টাকা আছে তাই হুড়মুড় করে বাজার থেকে প্রযোজনের তুলনায় ৪ থেকে ৫ গুন খাদ্যদ্রব্য কিনে ঘরে মজুত করে। এবার লকডাউন ঘোষণার পরও তাই দেখেছি আমরা। এর ফলে বাজারে পণ্যের সংকট তৈরি হয় আর তাতে পণ্যমূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে।

আর দেশের মজুতদাররাও এ সময় ঝোপ বুঝে কোপ মারবেন বলে একদম তৈরি থাকেন। সুযোগ বুঝে ১ টাকার পণ্য ২ টাকায় বিক্রি করে রাতারাতি আঙ্গুল ফলে কলাগাছ হন তারা। দিন এনে দিন খাওয়া মানুষগুলো কষ্টে পরে। ওদেরে কষ্ট বোঝার লোকতো আর নেই এ দেশে। তাই যা হবার তাই হয়। এসব বিষয়গুলো সরকারের ভাবনায় আসুক।

সরকারের যারা আছেন তারা সবাই অসৎ নন। বেছে বেছে এলাকা ভিত্তিক, জেলা কিংবা উপজেলা ভিত্তিক এসব সৎ মানুষদের মনিটরিংয়ের দ্বায়িত্বে রাখা গেলে ফলাফলটা যে ভালো হবে সেটা নিশ্চিৎ। আসলে আমাদের ভাবনাটা কম। সবার কথাই ভাবতে হবে।

লকডাউনতো মানুষের জীবন রক্ষা করার জন্যই। তাই মানুষের সার্বিক ভাবনাটা সরকারকে ভাবতেই হবে। বিশেষ করে দিন এনে দিন খাওয়া মানুষের কথা। এ সময় তাদেরই বেশি কষ্ট হয়। যারা রাজনীতি করেন তাদের বলছি। রাজনীতির খাতায় নাম লেখাতে পারলে এদেশে কামাইরোজগার বেশ ভালো হয়। তবে সব রাজনৈতিক নেতার ভাগ্যে আবার শিকে ছেঁড়ে না।

আবার অনেক রাজনীতিক আছেন যারা আসলেই মানুষের কল্যাণ করতেই রাজনীতিতে আসেন। তবে যারা এপথে ওপথে কামাই রোজগার করেন তাদের বলছি। দয়া করে জনগনের কতা ভাবুন। লকডাউনে গরীবের অনেক কষ্ট হয়। না খেয়ে থাকেন অনেকে। নিজেদের অসীম ধনভান্ডার দেকে কিছু দিন তাদেরও।

যেভাবে করোনায় মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে আর মানুষ মারা যাবার ঘটনা ঘটছে তাতে সরকারের লকডাউন দেওযা ছাড়া উপায় ছিলো না। লকডাউনে সরকার বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দেশের অর্থনীতির চাকা অচল হয়। তা সামাল দিতে সরকরকে হিমশিম খেতে হয়। মানুষের জীবনতো আগে, তাই লকডাউনে যেতে হয়েছে সরকারকে। সরকারকে সহায়তা করুন। যার যতটুকু সঙ্গতি আছে সেমতো গরীবদের সহায়তা করুন।

ইসলাম ধর্মে এসব রোগ-বালাইয়ের ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আল-কোরআনে মহামারী হলে যে যার স্থানে থাকার কথা বলা আছে। অন্য ধর্মেও রোগের ক্ষেত্রে সতর্ক করা আছে। প্রয়োজন না হলে ক’দিন নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, অন্যের জন্য ঘর থেকে বাইরে না যাওয়াই ভালো। প্রয়োজন থাকলে কী আর করা! মনে রাখবেন, এ সমস্যা কিন্তু অনেক দিন ধরে থাকবে না। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করবেনই।

কিছুদিন যারা সতর্ক থাকতে পারবেন, সবকিছু ঠিকঠক মেনে চলবেন তারা হয়তো এ বিপদ থেকে অনেকটা মুক্ত থাকতে পারবেন। তবে আমরা বেশিই অসাবধান। কোনো কিছুকেই গুরুত্ব দিতে চাই না কখনো। কোনো কিছু মানতে চাই না। এ অবস্থায় কি আমাদের রক্ষা হবে?

করোনায় করুণা করছে না কাউকে। সবচেয়ে ধনী দেশগুলো করোনায় কুপোকাত। উন্নত প্রযুক্তি, গবেষণা, করোনার ভ্যাকসিন, কোনটাই কাজে আসছে না। মানুষ মরছে প্রতিদিন। আমাদের আরও প্রস্তুত থাকতে হবে। আমরা কতটা প্রস্তুত? আর কতটা সতর্ক? সতর্কতা খুবই কম। মানুষ কথা শুনতেই চায় না। সরকারের নিয়মের তোয়াক্কা করে না। স্বাস্ত্যবিধি মেনে চলে না।

তাতে অনেক ভয়ংকর রুপে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়বে। সামাল দেয়া কঠিনই হবে। এখনই তা হচ্ছে। সতর্কতার অভাবে করোনাভাইরাসে সারাদেশে মানুষ এমনকি বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অনেক ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে। দিনদিন বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা। অরক্ষিত অবস্থায় স্বাস্থ্যসেবা দিতে গিয়ে এঅবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

যেভাবেই বলি, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় আমাদের যুদ্ধে নামতে হবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নিজের মনের সাথে যুদ্ধ করতে হবে। ঘুরতে না যাওয়া, বেশি মানুষ এক জায়গায় না হওয়া, চায়ের দোকান, বেশি বেশি বাজার করা, আড্ডাবাজি বন্ধ করতে হবে। করোনা নামক শত্রু এদেশে ঢুকে পড়েছে। সবাই সতর্কতার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে না পড়লে আমরা হয়তো এ যুদ্ধে হেরে যাব। আসুন, সবাই সতর্ক হই। যেকোন মহামারীতে সতর্কতার বিকল্প নাই।

এ যুদ্ধে আমাদের জিততেই হবে। যুদ্ধ জয়ের জন্য আমাদের আতঙ্কগ্রস্ত হলে চলবে না। দিশেহারা হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। করোনা পজেটিভ কিংবা উপসর্গ হলেই ভয়ে কুকড়ে মুকড়ে যাবেন না। করোনা পজেটিভ মানেই মৃত্যু নয়। আপনি নিয়মকানুন মেনে চললে ঠিকই সেরে উঠবেন। মনে রাখবেন, ভাইরাস থেকে রক্ষার একটাই পথ, সতর্কতা।

লকডাউনে গরিব, নিন্মবিত্তে, পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি দায়বদ্ধতা কোথায়? শোনা গেল না দেশের সাধারন গরিব মানুষের জন্য কোনও নতুন আর্থিক প্যাকেজের কথা। অন্তত করোনার আগে গরিবদের পেটের খিদে যেন তাদের না মেরে ফেলতে পারে। সমস্যা হল আগের পর্বের লকডাউন ও বর্ধিত লকডাউনের নেতিবাচক প্রভাব সরাসরি গিয়ে পড়ছে গরিব,নিন্মবিত্ত ও নিন্মমধ্যবিত্ত মানুষের মধ্যে। করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যার তুলনায় দুবেলা পেট ভরে খাবার জুটবে না এমন মানুষের সংখ্যা বাড়বে লাফিয়ে-লাফিয়ে।

সংবাদমাধ্যম আর সেই খবর কতটুকু সংগ্রহ করতে পারে। আসলে আমরা “নজরবন্দি” বারবার বলার চেষ্টা করছি করোনাভাইরাসে প্রাণ না গেলেও, পেটের খিদেয় মারা যেতে পারেন বহু মানুষ। অনেকে বলছেন ঘরে খুব সামান্যই চাল রয়েছে, আর অভুক্ত পেটে রয়েছে আগুন। বেড়ে গেল লকডাউনের সময়সীমা। আমরা সত্যিই জানিনা কিভাবে চলবে সংসার।

স্কুল-পাঠশালা সব বন্ধ। সরকার যদি সব গরিবের একাউন্ট অন্তত কিছু টাকা দিতেন তবে মানুষগুলো খেয়ে পরে বেঁচে যেত। এখন করোনা, আর দীর্ঘ লকডাউনে না মরে বেঁচে থাকা মানুষগুলো করোনায় নয় না খেয়ে মরবে। গরিবরা নিজেদের প্রতিরোধ করতে অক্ষম। রাষ্ট্র মানুষকে লকডাউনের পালন করতে বলছে, নাগরিক সেই কর্তব্য অক্ষরে-অক্ষরে পালন করার পর, সঞ্চিত অর্থ শেষ হলে খাবারের সন্ধানে নেমে আসবে রাস্তায়, নিতান্ত বেপরোয়া হয়ে নেমে আসবে। ব্যর্থ হতে পারে গোটা লকডাউন প্রক্রিয়া। সেদিন খাদ্যের সন্ধানে রাস্তায় নেমে আসা মানুষটিকে আইন মোতাবেক শাস্তি দিতে পারবে না প্রশাসন, কারন খিদের জ্বালা সহ্য করে লকডাউন মানার ক্ষমতা গরিব কেন, কোনও মানুষের নেই।

করোনা মোকাবিলায় সোমবার থেকে সারা দেশে বিধিনিষেধ বা কঠোর লকডাউন দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, যারা বিধিনিষেধ মানবে না, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাঠে থাকবে পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী। সাম্প্রতিক কালে যে হারে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েছে, তাতে এ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার বিকল্প ছিল না। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, আরও আগে এই বিধিনিষেধ দেওয়ার প্রয়োজন ছিল।

কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের মতে, সারা দেশে লকডাউন দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না। যেসব এলাকায় সংক্রমণ বেড়েছে, সেসব এলাকায় লকডাউন বা চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করাই জরুরি ছিল। যেমনটি গত বছর করা হয়েছিল।

সরকার বলেছে, জীবন ও জীবিকা উভয়ই রক্ষা করতে হবে। সে ক্ষেত্রে জীবনই অগ্রাধিকার পাবে। যে বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে, তার মাধ্যমে যদি সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, সেটি বড় অর্জন হবে। তবে সে জন্য সরকারকে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ নিতে হবে এবং বিষয়টিকে সামগ্রিকভাবে দেখতে হবে। বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্ত পদক্ষেপ কোনো কাজে দেবে না।

যে দেশে এখনো প্রায় এক–চতুর্থাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, মোট শ্রমজীবী মানুষের ৮০ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন, সেখানে জীবন-জীবিকার ভারসাম্য রক্ষা করা কেবল কঠিন নয়, অত্যন্ত দুরূহ। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয়ের পথ বন্ধ হলে কী হবে, সেটা বিবেচনায় নেওয়া জরুরি। তাদের জন্য কোনো ব্যবস্থা না রেখে বিধিনিষেধ কার্যকর করা অসম্ভব।

এক বছরের বেশি সময় ধরে করোনা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গত বছর দীর্ঘ লকডাউন গেছে। তখন অনেকে জীবিকা হারিয়েছেন। যে দারিদ্র্যের হার ২০১৯ সালের শেষের দিকে ২০ শতাংশের মতো ছিল, সেটা বেড়ে ৪০-৪১ শতাংশ হয়ে গেছে। তার মানে, দারিদ্র্যের হার প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। নতুন কোনো চাপ নেওয়ার ক্ষমতা এই জনগোষ্ঠীর নেই। সংক্রমণ রোধে বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত হয়েছে, কিন্তু দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সাহায্য-সহায়তার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।

গত সাধারণ ছুটিতে সরকার প্রান্তিক মানুষের জন্য যে বরাদ্দ দিয়েছিল, তা যথাযথভাবে তাদের কাছে পৌঁছায়নি। লাভের গুড় পিঁপড়ায় খেয়ে ফেলেছে। লকডাউন যত কম সময়ের জন্য হোক না কেন, হঠাৎ কাজ হারানো মানুষদের খাইয়ে বাঁচাতে হবে।

করোনা থেকে বাঁচার চেয়ে ক্ষুধা থেকে বাঁচা কম জরুরি নয়। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই। স্থানীয় সরকারগুলোর সহায়তায় দরিদ্রদের তালিকা তৈরি করে জরুরি ভিত্তিতে আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে। যথাযথ তালিকা করা গেলে সেটি পাঠানোর জন্য একটি টেলিফোন নম্বরই যথেষ্ট।

মো: সুমন সরদার
সম্পাদক ও প্রকাশক : দৈনিক ফুলতলা প্রতিদিন
যুগ্ম সম্পাদক : জাতীয় দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিন
কেন্দ্রীয় মহাসচিব : বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটি (বিএমএসএস)

শেয়ার করুন »

লেখক সম্পর্কে »

মন্তব্য করুন »