রাশিয়ায় গির্জা ও পুলিশ পোস্টে হামলা, ১৫ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত

আন্তর্জাতিক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

রাশিয়ার দাগেস্তানে দুটি গির্জা ও পুলিশ পোস্টে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে বন্দুকধারীরা। এতে ১৫ জনেরও বেশি পুলিশ কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

হামলাকারীদের মধ্যে ছয়জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

সোমবার (২৪ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় রোববার (২৩ জুন) সন্ধ্যায় দাগেস্তান প্রজাতন্ত্রে অবস্থিত ডারবেন্ট এবং মাখাচকালা শহরে পৃথক দুটি হামলায় ঘটনা ঘটে। দুটি অর্থোডক্স গির্জা, একটি সিনাগগ এবং একটি পুলিশ পোস্টে হামলা চালায় বন্দুকধারীরা।  

হামলার শিকার ওই সিনাগগ এবং গির্জা উভয়ই ডারবেন্টে অবস্থিত, যা প্রধানত-মুসলিম উত্তর ককেশাস অঞ্চলে প্রাচীন ইহুদি সম্প্রদায়ের আবাসস্থল।

অন্যদিকে হামলার শিকার পুলিশ পোস্টটি প্রায় ১২৫ কিলোমিটার (৭৮ মাইল) দূরে দাগেস্তানের রাজধানী মাখাচকালায় অবস্থিত।  

এ দুই হামলায় ১৫ জনেরও বেশি পুলিশ সদস্য এবং একজন অর্থোডক্স পুরোহিত নিহত হয়েছেন। এছাড়া আরও বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

রুশ ইহুদি কংগ্রেস তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, রোববার সন্ধ্যার প্রার্থনার প্রায় ৪০ মিনিট আগে ডারবেন্ট সিনাগগে হামলা চালানো হয়। বন্দুকধারীরা পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় এবং মোলোটভ ককটেল নিক্ষেপ করে।  

মাখাচকালায় হামলাটিও একই রকম ছিল বলে জানিয়েছে ওয়েবসাইটটি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে উপাসনালয়ের ভবনগুলোতে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে।

ইতোমধ্যে হামলাকারীদের মধ্যে ছয়জনকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দাগেস্তান প্রজাতন্ত্রের প্রধান সের্গেই মেলিকভ।  

হামলাকারীদের পরিচয় নিশ্চিত করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

মেলিকভ বলেছেন, ‘আজ (রোববার) রাতে ডারবেন্ট এবং মাখাচকালায়, অজ্ঞাত লোকেরা সেখানে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছিল। দাগেস্তান পুলিশ অফিসাররা তাদের পথে বাধা দেয়। তারা হামলা চালায়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। সমস্ত পরিষেবা নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছে এবং হামলাকারীদের পরিচয় নিশ্চিত করা হচ্ছে। ’

তবে রাশিয়ার বার্তাসংস্থা তাস জানিয়েছে, হামলাকারীরা ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের’ সদস্য ছিল বলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো মনে করছে।

এসব হামলা নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।  

তারা বলেছে, ডারবেন্টের সিনাগগটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং মাখাচকালার দ্বিতীয় আরেকটি সিনাগগে গুলি চালানো হয়েছে। হামলার সময়ে সিনাগগে কোনো উপাসক ছিলেন না বলে মনে করা হচ্ছে।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনায় একটি তদন্ত শুরু করেছে রাশিয়া তদন্তকারী কমিটি।